শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০১:০৭ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
পবিপ্রবিতে বাঁধন’র ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে কুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল শিল্পকলায় আসছে জবি নাট্যকলা বিভাগের ‘ডিজায়ার আন্ডার দ্য এলমস’ কুবিতে জুনিয়র কর্তৃক সিনিয়র হেনস্তার অভিযোগ ৭ দফা দাবিতে কুড়িগ্রামে সওজ কর্মচারীদের স্মারকলিপি প্রদান মুন্সিগঞ্জে দুস্থদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ ড্রাম ট্রাকের চাপায় যুবক নিহত নারীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে বউ-শাশুড়ি মেলা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২৫–২৬: নেতৃত্বে ইবি ও পবিপ্রবি বাউফলে ড. মাসুদের গণসংযোগ নাসিরনগরে দিনব্যাপী সীরাতুন্নবী (সা:) মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত পাইপ ফেটে বিষাক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস ছড়িয়ে ২০ জেলে আহত মাভাবিপ্রবিতে সৈনকিয়ান পূর্ণমিলনী ও নবীনবরণ অনুষ্ঠিত মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে চান আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক কুড়িগ্রামে দুর্গম এলাকায় বসবাসকারী ৬ হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সহায়তা করছে ব্র্যাক বাঘাইছড়িতে জাতিগত বৈষম্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ ৯০ দিনে কুরআনের হাফেজ হলেন মাহদী রাজাপুরে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ উদ্বোধন ২৯৯ নং আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে দীপেন দেওয়ানকে চান বাঘাইছড়িবাসী পটিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই শ্রমিকের মৃত্যু

নিকলীতে ধান সংগ্রহে নজরদারির অভাব, গুদামে চলছে অনিয়মের উৎসব

দিনার, নিকলী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ 

কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ধান সংগ্রহে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রকৃত কৃষকরা এক ছটাক ধানও দিতে পারছে না খাদ্য গুদামে। প্রভাবশালী ব্যবসায়ী আর ফড়িয়ারা দখল করে রেখেছে খাদ্য গোডাউন। এটি নিকলী উপজেলার খাদ্য গুদামের ঘটনা। আর কৃষকদের ধান বিক্রি করতে গিয়ে পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।

সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২৬ এপ্রিল থেকে সারা দেশে একযোগে ধান ক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়। এবার নিকলীতে সরকারিভাবে ১হাজার ৭৪মেট্রিক টন ধান ক্রয় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সরকার মণ প্রতি ১৪৪০ টাকা মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করার কারণে কৃষকরা খুশি। প্রতি কৃষি কার্ডের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৩টন ধান বিক্রয় করতে পারবেন একজন কৃষক।

কিন্তু কৃষকদের লাভের টাকা পুরোটাই যাচ্ছে পথে পথে। খাদ্য গুদামের শ্রমিকদের বিল, কসর বাবদ বাড়তি ধান প্রদানসহ নানা রকম ভোগান্তিত পোহাতে হয় কৃষকদের। কসর হিসেবে প্রতি মণে ২ কেজি বেশি করে দিতে হচ্ছে কৃষকদের। ৩ টন ধানে কসর বাবদ ১৫০ কেজি ধান অতিরিক্ত নিচ্ছে গুদাম কর্তৃপক্ষ।

খাদ্য গুদামে ধান দিতে আসা নিকলী সদরের কৃষক জমশেদ আলী (৬২) অভিযোগ করে বলেন, কৃষকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার নিয়ম না থাকলেও বস্তা সেলাই, ওজন এবং গুদামে ঢুকাতে প্রতি টনে ৫০০ টাকা করে নিচ্ছেন গুদাম শ্রমিকরা।

উত্তর দামপাড়ার কৃষক মোঃ একদিল মিয়া (৫৫) জানিয়েছেন, খাদ্য গুদামে ৩ টন ধান নিয়ে এসেছেন, প্রতি মণ ধান মাপার সময় দুই-আড়াই কেজি বেশি দিতে হয়েছে। আবার শ্রমিকদের মাধ্যমে ধান গুদামে ঢুকাতেও বস্তা প্রতি ২০ টাকা করে আলাদা খরচ গুনতে হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, খাদ্য গুদাম থেকে কোনো পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না। যারা ধান বিক্রি করতে আসেন, তারাই প্রতি টন ধানে ৫০০ টাকা দিয়ে থাকেন।

খোজঁ নিয়ে জানা যায়, ৭টি ইউনিয়ন মিলিয়ে ২ হাজার ৬ শত ৭৪জন কৃষকের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এই তালিকার মধ্য থেকে যে আগে আসবে তার ধান আগে নিবে ভিত্তিতে ধান ক্রয় শুরু হলে প্রভাবশালী নেতা এবং মৌসুমি ব্যাবসায়ীদের দ্বন্দ্বের ফলে গত ১৫ মে থেকে ধান ক্রয় বন্ধ ছিল, ঈদের পরে আবারোও চালু হয়েছে ধান ক্রয়ের কার্যক্রম।

প্রভাবশালী ব্যাবসায়ীরা তালিকা ভুক্ত কৃষকদের কাছ থেকে ১হাজার থেকে ১৫০০ টাকার বিনিময়ে কার্ডের ফটোকপি সংগ্রহ করে, কৃষকের পক্ষে ধান খাদ্য গুদামে দিচ্ছে। তবে বিগত পতিত স্বৈরাচারি আওয়ামী লীগের মতো ভয়াল সিন্ডিকেট না থাকলেও গোপন সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রতি মণে ২ কেজি অতিরিক্ত ধান নেওয়া এবং গুদামে ধান ঢুকাতে শ্রমিকদের প্রতি টনে ৫০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে, নিকলী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, এলএসডি) খন্দকার নিয়াজ হিমেল বলেন, ধান উঠানো-নামানো, ইঁদুরের আক্রমণ এবং আদ্রতা কমে যাওয়ায় প্রকৃত ওজনের কিছু পার্থক্য হয়। এছাড়া গুদামে ধান সংরক্ষণের তিন মাসের আগে গুদাম ভর্তুকি (সর্টেজ) পাওয়া যায় না।তিনি আরও বলেন, এখানকার শ্রমিকরা মাস্টার রোলে কাজ করে।

নিকলী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা লুৎফুরনাহার ‘জনপদ সংবাদ’ কে বলেন, কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি মণে অতিরিক্ত দুই-আড়াই কেজি ধান নেওয়া হচ্ছে বিষয়টি আজই প্রথম জানলেন, খুব দ্রুত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন বৈরি আবহাওয়ার জন্য ধান ক্রয় কিছুদিন বন্ধ ছিলো, ১৯শে জুন পর্যন্ত ৫০৪ টন ধান ক্রয় করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ধান বিক্রয় করতে আগ্রহী কৃষকদের কৃষি কার্ড এবং ভোটার কার্ড প্রাপ্ত হয়ে ২হাজার ছয়শত ৭৪ জনের তালিকা প্রস্তুত করে খাদ্য অফিসে পাঠানো হয়েছে।

নিকলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রেহানা মজুমদার মুক্তি কে সরকারি মুঠোফোনে একাধিকবার কল করে কোন সাড়া পাওয়া যায় নি।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩